নাক, কান, গলা রোগসমূহের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি
এ বিষয়ের উপর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা
করেছে ডা: এস এম আবদুল আজিজ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে
মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন, অন্য যত প্রাণী আছে তাদের মধ্যে মানবজাতিকে সুন্দর অঙ্গের সমন্বয়ে অত্যন্ত সুচারুরূপে সৃষ্টি করেছেন। মানবদেহের অঙ্গগুলোর মধ্যে নাক, কান ও গলাকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করেছেন। এ তিনটি অঙ্গের যেকোনো একটি অসুস্থ হলে সম্পূর্ণ মানবদেহই অসুস্থ হয়ে যায়।
হোমিওপ্যাথিতে রোগের নয়, রোগীর চিকিৎসা করা হয়। হোমিওপ্যাথি যদিও কোনো অঙ্গের নির্দিষ্টভাবে চিকিৎসা দেয়াকে সমর্থন
করে না, তবুও উপরিউক্ত
অঙ্গগুলো যেকোনো একটি রোগাক্রান্ত হলে
অন্য বিধানের চিকিৎসক তথা অ্যালোপ্যাথিকেরা অপারেশন বা সার্জারির জন্য পরামর্শ দিয়ে
থাকেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দেখা যায় তার বর্তমান রোগ লক্ষণ যেমন নাক, গলগণ্ড ও নাকের পলিপাস নাকে ডিএনএস সাইনোসাইটিসসহ বিভিন্ন সমস্যার, সাময়িক সমাধান হলেও অপারেশন বা অস্ত্রোপচারের ফলে অন্য আরো কয়েক ধরনের রোগের
লক্ষণ প্রকাশ পায়। যার ফলে পরবর্তীকালে রোগীকে অনেক কষ্ট পেতে হয়। এ সমস্যার দিকে
লক্ষ রেখেই মানবদেহের রোগ তথা নাক, কান ও গলার যে ধরনের রোগের লক্ষণ
প্রকাশ পায়, সেসব রোগের লক্ষণ ভিত্তিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়
রোগীকে অতি অল্প সময়ে বিনাকষ্টে অস্ত্রোপচার ছাড়াই আরোগ্য করা সম্ভব।
নাক, কান, গলা ও টিউমারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসায়
হোমিওপ্যাথিতে অস্ত্রোপচার ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি ওষুধ সম্বন্ধে একাধিক হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়ামেডিকা
ও রেপার্টরি অধ্যয়ন করলে প্রকৃত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সফলতা
পাওয়া যাবে।
মানবদেহের রোগ লক্ষণভিত্তিক নিম্নের ওষুধগুলোর সাহায্যে চিকিৎসা করা যেতে পারে নাকের পলিপাস ও সাইনোসাইটিসের ক্ষেত্রে ১. এলিয়াম
সিপা, ২. স্যাংগুইনিয়া, ৩. থুজা, ৪. অরামমেট, ৫. মার্ক সল, ৬. লাইকোপডিয়াম, ৭. নাক্স ভূমিকা ইত্যাদি ওষুধ নাকের পলিপাসের চিকিৎসায় সফলতার আশা করা যায়। তবে এগুলির প্রয়োগ প্রণালী চিকিত্সক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। রোগীরা সরাসরি
ঔষধ খেতে যাবেন না। অবশ্যই ভাল কোন হোমিওপ্যাথের কাছে ট্রিটমেন্ট নিবেন।
এ ছাড়াও বায়োকেমিক ওষুধেও নাকের পলিপাস ও সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা করা সম্ভব। রোগের সিম্পটম বা লক্ষণের প্রতি লক্ষ রেখে এই মেডিসিনগুলোও
প্রয়োগ করা যেতে পারে যথা: ১. ক্যালকেরিয়া ফ্লোর ২. ক্যালি ফস ৩.
ক্যালি মিওর ৪. ন্যাটরাম মিওর ইত্যাদি।
কানের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ১. কস্টিকাম ২. বেলেডোনা ৩. হিপার সালপ ৪. সাইলিসিয়া ৫. প্লানটা গো ৬. লাইকোপডিয়াম ৭. ম্যাডোরিনাম ইত্যাদি।
হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা ও হোমিও চিকিৎসা
বিজ্ঞানের আলোচনা থেকে যতটুকু বুঝতে পেরেছি এটা একটি প্রকৃত চিকিৎসাবিজ্ঞান। রোগীর কী কষ্ট, কী তার ইচ্ছা, কী তার চাওয়াপাওয়া সব কিছুই বিবেচনা করে ওষুধ প্রয়োগ
করাই হবে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাজ। এত সুন্দর একটা চিকিৎসা বিধান মানবজাতিকে ডা: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান উপহার দিয়েছেন।
ডা: স্যামুয়েল হানেমানের আবিষ্কৃত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি
যুগ যুগ ধরে মানবজাতিকে সুস্থ ও আরোগ্য করতে সক্ষম হচ্ছে। মানুষ জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করছে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
ব্যবস্থা মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখছে। যেকোন অসুস্থতায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন, সফল এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা গ্রহণ করুন। সুস্থ থাকুন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন