বিস্তারিতভাবে স্তন পরীক্ষার পদ্ধতি কী?


বিস্তারিতভাবে স্তন পরীক্ষার পদ্ধতি কী? ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত করে আয়নার সামনে দাঁড়ান। যেন পর্যাপ্ত আলো থাকে। প্রথমে স্তন দুটিকে লক্ষ করুন। ফোলা, লালচে ভাব, নিপলের চারপাশের রঙের কোনো পরিবর্তন, ত্বকের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি কোনো অসুবিধা নজরে এলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে স্তন পর্যবেক্ষণ করতে হবে সামনের দিকে, পাশের দিকে, হাত ওপরে তুলে। এর পরের ধাপে ডান হাতের আঙুল দিয়ে বাম স্তন এবং বাম হাতের আঙুল দিয়ে ডান স্তন পরীক্ষা করতে হবে। স্তনের সমস্ত অংশে আঙুলের চাপ দিয়ে দেখতে হবে কোনো রকমের ঢেলা বা ব্যথাহীন ফোলা অংশ আছে কি না। এরকম কিছু অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। ব্যথা-যন্ত্রণা না থাকলেও ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। কেননা প্রাথমিক অবস্থায় কান্সার আক্রান্ত টিউমারে কোনো ব্যথার অনুভূতি থাকে না। নিয়মিত স্তন পরীক্ষা প্রতিটি নারীকে অনেক অবাঞ্ছিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে, সর্বোপরি দীর্ঘজীবন দিতে পারে। স্তন ক্যান্সারঃ বাস্তব কিছু প্রশ্ন কেবল আমেরিকায় এক বছরে নতুন করে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৮২,০০০ মহিলা। আর প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬,০০০ জন। তাও আমেরিকান মেয়েরা এ দেশের মেয়েদের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। তা হলেই বুঝুন আমাদের দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ছবিটা। এ তথ্য অবশ্য প্রায় দশ বছর আগেকার। মৃত্যুর হারকে এক জায়গায় থামিয়ে রাখা গেলেও, স্তন ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার গতিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি মডার্ন মেডিকেল সায়েন্স। কী করবেন স্তন কর্কট রোগ বাসা বাঁধলে, কী করেই বা বুঝবেন- এরকম অনেক জটিল প্রশ্নের সহজ সমাধান জেনে নিন। কী করে বুঝবেন ক্যান্সারে আক্রান্ত কি না সত্যি কথা বলতে কী, সেরকম নির্দিষ্ট কোনো উপসর্গ নেই বা বাইরে থেকে দেখে বলা যায় যে স্তন ক্যান্সার অবধারিত। তবে কিছু কিছু শারীরিক লক্ষণ দেখলে এ ব্যাপারে সাবধানতা নেয়া জরুরি। সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ব্রেস্টের লাম্প বা ফোলা কোনো অংশ, কোনো নির্দিষ্ট অংশের ত্বক পুরু হয়ে যাওয়া অথবা স্তনের যে কোনো অংশে কোনো গুটিলির মতো শক্ত অংশ। আর বিরল কয়েকটি ক্ষেত্রে দু-একটি অদ্ভুত ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- স্তন ফুলে গিয়ে লালচে হয়ে ওঠে অথবা বাহুমূলে (বগলের নিচে) বড়সড় গ্ল্যান্ড (লিম্ফ নোড) দেখা যেতে পারে। তবে হ্যাং এরকম উপসর্গ মানেই যে ব্রেস্ট ক্যান্সার তা কিন্তু নয়। দেখা গেছে একই রকম উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও ব্রেস্টের লাম্পটি ক্যান্সার নয়, সাধারণ টিউমার। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ যে, কোনোরকম লক্ষণ দেখা গেলে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে অবিলম্বে উপযুক্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। স্তনের সাধারণ টিউমার বা সিস্ট কি ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে? স্তনের সিস্ট বা লাম্প একটা সাধারণ সমস্যা। কিন্তু তারা সহজে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয় না, যৎসামান্য দু-একটি ক্ষেত্র ছাড়া। প্রথমেই চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন ফোলা অংশটি সিস্ট না লাম্প (FNAC বা ফাইন নিডল অ্যাসপিরেশন সাইটোলজির সাহায্যে)। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্রেস্টের গ্রোথটি হলো ফাইব্রো অ্যাডেনোমা। এটা সেরকম ক্ষতিকর নয়। তবে আর এক ধরনের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিজনিত লাম্প দেখা যায়। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় ‘প্রলিফারেটিভ অ্যাটিপিক্যাল হাইপারপ্লেশিয়া’। এই কোষের গঠন স্বাভাবিক কোষের থেকে একেবারে অন্যরকম। দেখা গেছে, এই প্রলিফারেটিভ অ্যাটিপিক্যাল হাইপারপ্লেশিয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। অন্যান্য বিনাইন লাম্পের থেকে এই বিশেষ ধরনের লাম্পের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা সাড়ে চারগুণ বেশি।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ