ছয়টি দরকরি খাদ্যের উপাদান

(ডা. খাইরুল ইসলাম রিপন) 
মানুষের দেহের যাবতীয় কার্যাবলি সুষ্ঠু সম্পাদনের জন্য দরকার খাদ্যের ছয়টি উপাদান। তাদের মধ্যে একটি হলো ভিটামিন। ভিটামিন পরিবারের মধ্যে ভিটামিন-সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অর্জুন
উদ্ভিদের নাম : অর্জুন।
বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalla Arjun Bedd।
স্থানীয় নাম : অর্জুন।
Ø হৃদরোগ : অর্জুনের ছাল ভালবাবে পিশে চিনি ও গরুর দুধের সাথে প্রতিদিন সকালে বছরকাল খেলে যাবতীয় হৃদরোগ সেরে যায়। তবে বিশেষ রোগীদের ক্ষেত্রে সেবন পদ্ধতি হলো দেড় পোয়া পানি, আধা পোয়া গরুর দুধ এবং দুই তোলা আর্জুন ছালের গুড়ো একত্রে জ্বাল দিয়ে আধ পোয়া পরিমান করতে হবে এর পর নামিয়ে ফেলে ছেকে নিতে হবে। ছেকে নেওয়ার ফলে যে ক্বাথ তৈরী হবে তা হৃদরোগে সেবন করা হয়। সকালে খালি পেটে খেতে হয়।
ব্যবহায্য অংশ : প্রধানত ছাল ( পরিনত গাছের ) তবে পাতা এবং ফলও ব্যবহত হয়।
ভেযজ নাম : অর্জুন।
রোপণের সময় : অর্জুন বৃক্ষ সাধারনত লাগান হয়ে থাকে। নার্সারী থেকে চারা এনে সহজেই জন্মান যায়।
উত্তোলণের সময় : অর্জুন গাছ ৫০ থেকে ৬০ ফুট উচু হয়ে থাকে। অর্জুন গাছ প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলে এর ছাল তুলতে হয়।

আবাদী/অনাবাদী/বনজ : এটি আবাদী উদ্ভিদ।
চাষাবাদের ধরণ : নার্সারী থেকে চারা এনে সহজেই জন্মান যায়।
উদ্ভিদের ধরণ : বৃক্ষ।
ঔষধি গুণাগুণ : হৃদরোগ, রক্তঅর্শ, উদারাময় ও রক্তআমাশয়, রক্তপিত্ত, লো-ব্লাডপ্রেসার, হাড় ভাঙ্গা, ব্যাথা, মেচতা, মূত্র অবরোধ, ক্ষয়কাস, কান ব্যাথা, হৃতপিন্ডের ধরফড়ানি, দূরবলতা, ইত্যাদী রোগের উপকার হয়ে থাকে।
ব্যবহার :
Ø রক্তঅর্শ , উদারময় ও রক্তঅামাশয়: এক ভাগ অর্জুনের ছাল আধসের পানিতে জ্বাল দিয়ে যে ক্বাথ তৈরী হয় তা আধা আউন্স মাত্রায় খেলে রক্তঅর্শ, উদারময় ও রক্তআমাশয় ভাল হয়।
Ø হাড় ভাঙ্গা: কোন স্থানে ভেঙ্গে গেলে সেই স্থানে অর্জুন গাছের ছাল ও রসুন বেটে প্লাষ্টার করলে হাড় ভাঙ্গা জোড়া লেগে যায়। সন্দ্বি হাড় ভেঙ্গে গেলে দুধ ও ঘি এর সাথে অর্জুন ছালেন গুড়ো খেলেও উপকার হয়ে থাকে।
Ø ব্যাথা: অর্জুন ছালের গুড়ো দুধের সাথে খেলে আঘাত জনিত ব্যাথা ভাল হয়।
Ø মেচতা: অর্জুন ছাল মধুর সাথে পিষে প্রলেপ দিলে মেচতা রোগ সেরে যায়।

Ø মূত্র অবোরোধ: কোন কারনে মূত্র অবোরোধ হলে অর্জুন ছালের ক্বাথ পান করলে মূত্র অবরোধ সেরে যায়।

Ø ক্ষয়কাস: বাসক পাতার রস ও মধুর সাথে অর্জুন ছালের গুড়ো খেলে ক্ষয়কাস সেরে যায়।
বেল
উদ্ভিদের নাম : বেল।
বৈজ্ঞানিক নাম: Aegle marmelos corr.
স্থানীয় নাম : বেল।
ভেযজ নাম : বেল।
ব্যবহার্য অংশ : ফল, ফুল, পাতা, শিকড়, ছাল ।
রোপণের সময় : বেল বৃক্ষ সাধারনত বর্ষার সময়ে লাগান হয়ে থাকে। নার্সারী থেকে চারা এনে সহজেই জন্মান যায়।
উত্তোলণের সময় : প্রযোজনীয় যে কোন সময়ে এর ফল-পতা, ফুল, শিকড়,ছাল উত্তোলোন করা যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : এটি আবাদী উদ্ভিদ।
চাষাবাদের ধরণ : নার্সারী থেকে চারা এনে সহজেই জন্মান যায়।
উদ্ভিদের ধরণ : বৃক্ষ।
ঔষধি গুণাগুণ : অম্বল ও অজীর্ণ রোগ, পুরাতন আমাশয়, পেটের অসুখ, স্মৃতি শক্তি বৃ্দ্দি, হাত-পা ফোলা, হজম শক্তি , ঘামে দুর্গন্ধ, সর্দি, ক্ষুদা কমা, প্রলাপ বা ভূল বকা , অর্শ রোগ, চক্ষু ও কানপাকা রোগ, বমি, শ্লেষ্মা রোগ ( নিউমিনিয়া ) ইত্যাদী।
ব্যবহার : ঔষধে কচি বেলরই বিশেষ প্রয়োজন। কচি বেলকে বিল্ব, কর্কঢী বলা হইয়া থাকে। ঔষধে বেলগাছের পাতা, শিকড়, ছাল, ও বেল, ফুল ব্যবহার হইয়া থাকে।

Ø অম্বল ও অজীর্ণ রোগ : তপ্ত আগুনে কাঁচা বেল পুড়িয়ে আখের গুড়েড় সাথে সেবন করিলে আমাশয়, অম্বল ও অজীর্ন ভাল হয়ে থাকে।
Ø পুরাতন আমাশয়: কাঁচা বেলকে চাকা চাকা করে কেটে রোদে শুকিয়ে অথবা ভেজে সদ্যপাতা দই এর ঘোলে মিশিয়ে খেলে পুরাতন আমাশয় ভাল হয়।
Ø পেটের অসুখ রোগ: কাঁচা বেল পুড়িয়ে নিতে হবে। কাঁচা বেল পুড়িয়ে খেলে পাতলা দাস্ত বন্দ হয়।

Ø স্মৃতিশক্তি বৃ্দ্দি: প্রতিদিন ৩/৪ টি বেলপাতা ভেজে সামান্য মিছরি, চিনি বা গুড়ের সাথে মিশিয়ে খেলে ক্রমশ স্মৃতিশক্তি বৃদ্দিপায়। ছেলেবেলায় যাদের স্মৃতিশক্তি অভাব তাদেই এটি ভাল কাজ করে থাকে তবে বৃদ্দদের নয়।

Ø হাত-পা ফোলা: বেলপাতার রস মধু দিয়ে খেলে হাত পা ফোলা ( পানি আসা )রোগ ভাল হয়।

Ø পরিপাক ক্রিয়া ব্যঘাত ঘটলে: হজম শক্তি কম হলে পোড়া বেল এবং কাঁচা বেল সেবন করলে হজম শক্তি বৃদ্দি পায়।

Ø ঘামে দুর্গন্ধ হইলে করনীয়: বেলপাতার রস শরীরে মাখলে দুর্গন্ধ দূর হয়।

Ø সর্দি হইলে করনীয়: কাঁচা বেল সেবন করলে সর্দির বিশেষ উপকার হয়।

Ø ক্ষুদা কমে গেলে করনীয়: কচি বেল পোড়া খেলে ক্ষুদা বৃদ্দি পায়।

Ø প্রলাপ বা ভূল বকা করনীয় : বেলপাতা পিশে মস্তকে প্রলেপ দিলে প্রলাপ বা ভূল বকা বন্ধ হয়।

Ø অর্শ রোগ করনীয়: পাকা বেল খেলে অর্শ রোগের উপকার হয়ে থাকে।

Ø চক্ষু রোগ ও কানপাকা রোগ উপকার: বেল ফুল পেষন করে তাহার রস কানের মধ্যে দিলে কানপাকা রোগ ভাল হয়। এবং বেলফুলের রস চোখের চার পাসে দিলে চোখের রোগের উপকার পাওয়া যায়।

Ø বমি বমি ভাব হইলে করনীয়: বেলগাছের শিকড়েরর ছালের রস একতোলা পরিমান ওষুধসহ সেবন করিলে বমি-বমি ভাব দূর হয়।

Ø শ্লেষ্মা রোগ ( নিউমিনিয়া ): বিনা জলে বেলপাতা পিষে বুকে প্রলেপ দিলে সুফল পাওয়া যায়।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ